Saturday, October 4, 2008

সমঅধিকার পাওয়া এক নারীর জীবন....

অত্যন্ত খুশির সংগে জানাচ্ছি যে বাংলাদেশে নারী পুরুষের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে নীতিমালা প্রণয়নের কাজ সফলতার সাথে শেষ হয়েছে। আস্তে আস্তে সকল ইসলামী আইনও উঠে যাবে এই স্বাধীন প্রগিতিশীল দেশ থেকে ইনশা-শয়তান। তাই আমরা এখনই এ ব্যাপারে স্বপ্ন দেখতে পারি, কেমন হবে আগামী প্রজন্মের বেড়ে ওঠা। তাই চিন্তাগুলো কিছুটা ভাগাভাগি করা যাক।

২০০৮ সাল, এপ্রিল মাস। মি: এবং মিসেস আলমের ১০ মাসের অপেক্ষার পর ফুটফুটে দুই জমজ শিশুর জন্ম হল আজ। দেখেই আলহামদুলিল্লাহ না বলে ফখরুদ্দিন সাহেবের জয়গান গেয়ে প্রতিজ্ঞা করলেন " আমি আমার সন্তানের সমঅধিকার নিশ্চিত করব।" মেয়ের নাম রাখলেন সিডনি আর ছেলের ক্যানবেরা। আলম সাহেব মোটামুটি ধরনের একটা চাকরি করেন। ঢাকায় মহাখালিতে তার ছোট্ট একটা বাড়ি আছে। ছিমছাম অবস্থা। যে করেই হোক ছেলে মেয়ের জন্য সমান মানের সমান সমান খাবারের ব্যবস্থা করতে লাগলেন। ওরাও বড় হতে লাগল। ছেলেকে যে দামে জামা কিনে দেন মেয়েকেও সেই দামেই জামা কিনে দেওয়ার ব্যবস্থা করলেন।

স্কুলে ভর্তির ব্যাপারে আরেক ঝক্কি। মেয়েকে ভিকারুন্নিসায় আর ছেলেকে আইডিয়ালে ভর্তি করিয়ে প্রতিজ্ঞা ভাংলেননা আলম। অনেক কষ্টে দুজনকে শাহীন স্কুলে দিলেন ভর্তি করে। ক্লাশ সিক্সে ওঠার পর থেকে একলা স্কুলে আসতে হচ্ছে ওদের। এর মধ্যে আবার সিডনি আর ক্যানবেরার মধ্যে ছেড়াবেড়ার মত সম্পর্ক। একজন আরেকজনকে সহ্য করতেই পারে না। ওরা স্কুলে আলাদা আসত। ছেলেকে একলাই আসতে দিতেন। মিসেস আলম চেয়েছিলেন মেয়ের সাথে তিনি আসবেন কিন্তু তাতো আর আলম সাহেব হতে দিতে পারেননা। প্রতিজ্ঞার কাছে তিনি অচল।

মেয়ে বড় হতে লাগল। সে ভাইয়ের মতই স্কুলে হেটে অথবা বাসে ঝুলে আসা যাওয়া করতে লাগল। সিডনি যতই বড় হল পেছনে বখাটে ছেলেদের জ্বালাতন শুরু হল। পুরো স্কুল জীবন, কলেজ জীবন আর ইউনিভার্সিটি এভাবেই দু:সহ জ্বালায় কাটাতে হল। পরিবার তার সমঅধিকার দেওয়ার মাধ্যমে বাড়তি সুবিধাগুলো কেড়ে নিয়েছে। যেগুলো আগে পরিবারের মেয়েরা পেত অর্থাৎ বাড়তি নিরাপত্তা।

তারপর এল বিয়ের ব্যপার। সমঅধিকার আইনে মেয়েদের পুরুষের কাছ থেকে পাওয়া নিরাপত্তা সম্পদ মোহরানা প্রথা রহিত হয়েছে। আর বাবার সম্পদ ভাইয়ের সমান পাওয়ার প্রথা চালু হয়েছে। তাই স্বভাতই সিডনির বিয়ে হল দেনমোহর ছাড়াই। স্বামী এবং সে সংসারে সমান সমান ব্যয় নির্বাহ করে। এইজন্য তাকে একটা চাকরি করতে হচ্ছে। এরই মধ্যে হঠাৎই তার সন্তান জন্ম দেয়ার সুসংবাদ পেল। শেষ দিকে তিন মাসের মত অফিসে যেতে পারল না সিডনি। দুমাসেই তার জমানো টাকা শেষ হয়ে গেল। স্বামীর রাগ শুরু। সে সিডনির ব্যয় নির্বাহ করতে অস্বীকৃতি জানালো। তালাক দিল সিডনিকে। দেশে ইসলামী সকল আইন নিষিদ্ধ। তাই কিছুই করতে পারলো না অসহায় মেয়েটি। বাধ্য হয়েই বাবার কাছ থেকে পাওয়া সম্পত্তিটুকু বেচে দিল। তা দিয়ে হাসপাতালের বিল মিটিয়ে অল্প কিছুদিন খাওয়া পরাও চালালো। সন্তান থাকায় কোন চাকরি পেল না সে। দিশেহারা সিডনি চোখে এখন আঁধার দেখছে....... কি করবে সে এখন?


প্রশ্ম সবার কাছে এভাবে কি নারী সমাজ উপকৃত হতে পারবে? না অনিশ্চয়তার মাঝে নিজেকে আবিষ্কার করবে????

No comments: