Saturday, October 4, 2008

মৌলবাদ প্রসারতার মূল ....সত্যিকার অর্থে আমরা সবাই মৌলবাদী...

আমরা অনেকে মৌলবাদী বলে একদল মানুষকে বুঝাই যারা পান্জাবী টুপি পরে তজবি গুনতে গুনতে খালি মসজিদে আসা যাওয়া করে। আর প্রগতির কথা শুনতেই পারে না। ঘোর গোঁয়ার..। এরা ব্লগ ব্যবহার করতে পারে কি করে বুঝিনা। ওরা আসার পর থেকে ব্লগ যেন কেমন পর হয়ে যাচ্ছে। ওদের ১৪০০ বছর আগের অখন্ডনীয় যুক্তিগুলো এখনও আমাদের শান্তি দিচ্ছেনা। ওদের কাছ থেকে যত দূরে থাকা যায় আর যেভাবে পারা যায় গালী গালাজ করে বের করে দেয়া যায় ততই মঙ্গল.......

সে যাকগে, মৌলবাদ বলতে সত্যিকার অর্থে যা বোঝায় তা হল মূলকে আঁকড়ে থাকা। যেমনটি আঁকড়ে থাকে ওইসব লোকজন যাদের এত বলার পরও তাদের পথে অনড়। আমরা কিন্তু সহজেই কোন পথ থেকে সরে দাঁড়াই না। যে যা ভাবি তাই শুধু বলতে থাকি। অনেক সময় কিছু না ভেবেই একই কাজ বারবর করি। কিন্তু এটাকে বোকামী বলা আমি স্বীকার করি না। আসলেই এটি বোকামী নয়। কেননা একটি আদর্শ একদিনে গড়ে ওঠেনা।

যাই হোক, মূল আঁকড়ে থাকা খারাপ কিছু নয়, বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটিই আমাদের বর্তমান উন্নতির কারন।

উদাহরণস্বরূপ নিউটন ও আইনস্টাইনের সূত্রগুলো আমরা ঠিকই আঁকড়ে ধরে রেখেছি। আর এরই ফলে আমরা দিনদিন নতুন নতুন জিনিষ তৈরী করছি ওই শত বছরের পুরোনো সূত্রগুলোর সমন্বয়ের মাধ্যমেই। এই সূত্রগুলো একশো বছর আগে ছিলনা তাই তখনকার সমাজ অত উন্নতও হতে পারে নাই। তার মানে তাদের পুরোনো তত্ত্বগুলোর কারনেই আজকের এই উন্নতি সাধিত হয়েছে। যদি আমরা চাই আবার নতুনভাবে সূত্র আবিষ্কার করে নতুনভাবে সব শুরু করবো তবে সভ্যতা আবার একশ বছর পিছিয়ে যেতে হবে।

কুরআন যখন রাসূল (সা) এর মাধ্যমে নাযিল হল তখন পৃথীবীর মানুষ সত্যিই এক কালো যূগ থেকে বেঁচে শান্তির পরশ পেল। সমাজে যেই পরিবর্তন এল তা সত্যিই অভাবনীয়। যা অতীতে ছিল না। সেই নতুন সভ্যতার পরশ ধীরে ধীরে প্রায় সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ল। একদল মানুষ সেই পরিবর্তনকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে তার মাঝে বিভিন্ন যূগে যূগোপযোগী করে এবং সীমা লংঘন না করে। তাঁদের কিছু এখনও বর্তমান তা somewhereinblog .এ. ও বুঝতে সমস্যা হচ্ছে না। বুঝতেই পারছেন তারা খুব খারাপ কিছু করছেনা। তারা সেই ১৪০০ বছর আগের সমস্যাগুলো থেকে বেঁচে থাকছেন। বরং এগিয়ে আছেন কিছু ব্যপারে।

এবার একটা উদাহরন দেখুন আমরা এমনকি অমুসলিমরাও কিভাবে ইসলামী মৌলবাদী। আমরা যারা কমপিউটার ব্যবহার করছি তাদের অনেকেই জানি কমপিউটার এর ভাষায় দুটি অক্ষর ০ এবং ১। এই দুটি অক্ষর ব্যবহার করে তৈরী হয়েছে কম্পাইলার আর একে দিয়ে তৈরী হয়েছে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ। আর এর মাধ্যমেই তৈরী কম্পিউটারেরর বিভিন্ন সিস্টেম এবং এপ্লিকেশন সফটওয়ার। আর এগুলোই আমাদের এই ভার্চুয়াল জগত উপহার দিয়েছে। পুরো কম্পিউটার সিস্টেম এলগোরিদমের বিভিন্ন প্রয়োগের ভিত্তিতে চলছে। আর এই এলগোরিদমের আবিষ্কারক আল খারিজমী। তিনি এটি আবিস্কার করেছেন সম্পুর্ণ আল-কুরআন থেকে।

তারমানে কি দাঁড়ালো আমরা কুরআনের মৌলিকতাকে প্রতিনিয়ত ব্যবহার করছি। আর যদি আমরা তা থেকে নিস্তার পেতে চাই তবে আমাদের আবার নতুনভাবে ১৪০০ বছর খেটে নতুনভাবে কম্পিউটার তৈরী করতে হবে যা আর সম্ভব নয়। সুতরাং আমরা সকলেই কোন না কোন মতে মৌলবাদী। আর এ মৌলবাদ আমাদের অনেক সুফল দিয়েছে।

নিউটনের সূত্রেও কিছু টলারেন্স রয়েছে কিন্তু আল কুরআনে কোন ভূল নেই। এটি একটি কুরআনের চ্যালেন্জ যা গত ১৪০০ বছরে কোন বড় বিজ্ঞানীও খন্ডাতে পারেনি বরং কুরআনকে রিসার্চ করে অনেক নাম কামিয়েছে। তবে জীবনের সব ক্ষেত্রে কুরআনকে মৌলিক আদর্শ মানতে সমস্যা কি? তবে মৌলবাদীরাই তো নিরাপদে আছে। ওরা সুখে থাক আর আমরা যারা মৌলবাদী হওয়ার ক্ষমতা রাখিনা তারা তাদের অন্তত সাধুবাদ জানাই। কেননা মৌলবাদী হওয়া কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। মৌলবাদিদের জানাই Best of luck....

No comments: