Thursday, October 9, 2008

ভিখিরি উচ্ছেদ অভিযান

ভিখিরি বাংলাদেশে এক বিরাট প্রবলেম। ঢাকার রাস্তাঘাটে হাটতে গেলেই বিভিন্ন রকম ভিখিরির দেখা মেলে। এ ঘটনা শুধু ঢাকায়ই নয়, চট্টগ্রাম, সিলেট সহ সকল বড় বড় শহর এমনকি মফস্বল শহরগুলোরও এক সাধারন দৃশ্য।

ভিখিরিদের রাস্তার ফুটপাত ধরে দাড়িয়ে, বসে এমনকি শুয়ে থাকতে দেখা যায়। একদল ভিখিরি আবার হেটে হেটে ভ্রাম্যমান ভাবে ভিক্ষে করে।

ফুটপাতের ভিখারিরা প্রায়ই আমাদের হাটার সময় বিরক্ত করে। দেখা যায় ভার্সিটি যাচ্ছি অলিম্পিক ফাস্র্ট গতিতে । এর মধ্যে শার্ট ধরে টান দিয়ে বসে। রাস্তা আটকে ভিক্ষা প্রার্থনা করে। আর ফুটপাতের বেশ খানিকটা আটকে রাখে এ ভিখারীরা, যার ফলে অফিস টাইমে তো কথাই নেই। বিরাট বিপাক।

আর যারা হেটে হেটে ভিক্ষা করে তারা বিপাকে ফেলে বেশি। এরা অফিসে আদালতে, ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে, বাসা বাড়িতে ইত্যাদি। মাঝে মাঝে হঠাৎই একদল কোরাস শিল্পি একই ভঙ্গীতে রাস্তা আটকে গড়াতে দেখা যায়। কখনো হয়তো দেখা যায় ছোট্ট একটা ছালার টুকরা পরে হাটতে থাকা ভিক্ষুক। আর গান গাওয়া অন্ধ ভিক্ষুকের গানের কোন জুড়ি নাই, সারাদিনই বাজতে থাকে।

ভিখারীরা ভিক্ষা করে তাদের দৈহিক বিকলাঙ্গতার জন্য কাজের অক্ষমতার কারনে। বিভিন্ন ভিক্ষুকের বিকলাঙ্গতা:
১. হাত কাটা যাওয়া।
২. হাত অবশ হয়ে যাওয়া।
৩. গোদের কারনে হাত কাজের অনুপযোগী হওয়া।
৪. পা কাটা যাওয়া, অবশ হয়ে যাওয়া, ও গোদ রোগ।
৫. অন্ধত্ব। ইত্যাদি।

উপরে উল্লেখিত ভিক্ষুকদের ভিক্ষা দিতে মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে। কিন্তু আরেকদল ভিক্ষুক আছে যাদের ভিক্ষা পাবার কোন অধিকার নেই। যেমন কোন বিকলাঙ্গ শিশুকে নিয়ে শিশুর বাবা মার ভিক্ষা কখনোই যৌক্তিক নয়। তার পর সবল কাজে সক্ষম বৃদ্ধা বা জোয়ান মহিলা। তাছাড়াও একদল সবল পুরুষ ভিক্ষুকও আছে। তারপর শিশু ভিক্ষুক। এদের কাজ করার ক্ষমতা অথবা অভিভাবক রয়েছে। এদের ভিক্ষা পাবার কোন অধিকার নেই। কিন্তু সত্যিকারের ভিক্ষুকদের তুলনায় এদের ক্ষমতা বেশি যার ফলে এদের পরিসর বড় বলে এরা ভিক্ষা বেশি পায়।

আরেক ধরনের সাহায্য প্রার্থী রয়েছে যারা প্রফেসনাল ভিক্ষুক নয় তবে প্রয়োজনের তাগিদে অতি লজ্জাকে পরিহার করে রাস্তায় নামে, মসজিদে যায়, মাঝে মাঝে বাসা বাড়িতে যায় সাহায্যের জন্যে। এদের সাহায্য করা সকলের নৈতিক দায়িত্ব। কেননা এদের মত প্রবলেম আমাদের সকলের জীবনেই আসতে পারে। যেমনটি অমিত, শাশ্বত সত্য।

আমরা কি ভিক্ষকদের রাস্তা থেকে সরাতে পারি না? সরকার হয়তো চাইলে একদিনেই পারে। একদিন উচ্ছেদ অভিযান চালালেই মোটামুটি সাফ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তা কখনোই নৈতিক নয়।

আমার সাজেশন:
১. আমরা একটা অর্গানাইজেশন গড়ে তুলতে পারি যেটি সত্যিকারের সাহায্য প্রার্থীকে বাছাই করবে।
২. সত্যিকার সাহায্যপ্রার্থীকে আইডি কার্ড দেওয়া হবে।
৩. ভিক্ষকদের জন্য ফান্ড তৈরী করা হবে। সে ফান্ড থেকে সকল আইডি প্রাপ্তদের ভাতা দেয়া হবে।
৪. জনগনের সবাইকে তাদের ভিক্ষার জন্য ও সাহায্যের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা এ ফান্ডে জমা দেয়ায় উৎসাহী করে তুলতে হবে। প্রয়োজনে সাহায্যপ্রার্থীদের নিয়ে সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ক্যাম্পেইন ইত্যাদি করা হবে।


আপনাদের কারো কাছে যদি পোষ্টটি গ্রহনযোগ্য মনে হয় এবং নতুন কোন পরামর্শ দেয়ার থাকে তবে তা দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

No comments: