Thursday, October 9, 2008
আজ মহান মে দিবস: শ্রমিকদের নিরাপত্তা চাই
আজ পহেলা মে। মহান মে দিবস। । ১৮৮৬ সালে ৮ ঘন্টা কর্মদিবসের দাবীতে আন্দোলনে নিহতদের স্মরণে আজকের এই দিন বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক শ্রমদিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।
আজকের বাংলাদেশে এর প্রভাব কি? বাংলাদেশের অধিকাংশ শ্রমিক অশিক্ষিত নয়তো উপযুক্ত শিক্ষাপ্রাপ্ত নয়। তাই তাদের বেশিরভাগই এই দিনটি সম্বন্ধে জানেনা। তারপরও কিছুদিন পরপরই বাংলাদেশের শ্রমিক-মালিক ক্ষোভ মে দিবসের চেতনা সৃষ্টি করে।
বাংলাদেশের শ্রমিকদের বর্তমার অবস্থা কাঙ্খিত অবস্থায় নেই। বাংলাদেশে ৮ ঘন্টা কর্মদিবসের পদ্ধতি থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শ্রমিকদেরকে জোর করে বেশি খাটানো হচ্ছে। নেই বেতনের ব্যাপারে কোন নিয়ম। বেতন দেয়া হয় এত কম যে এ বাজারে কোনমতে বাচাও কষ্টকর হয়ে যায়। আবার নির্দিষ্ট সময়ে বেতন না দেওয়া একটি সাধারন ঘটনা। বিশেষ করে গ্রাম ছেড়ে শহরে আসা মহিলা গার্মেন্টস শ্রমিকদের জীবন বাচানোর জন্য চাকরীর পাশাপাশি পার্টটাইম দেহব্যাবসাও করতে হচ্ছে।
কন্সট্রাকশন শ্রমিকদের অবস্থা সবচাইতে খারাপ। এদেরকে প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তাদের উঁচু বহুতল ভবনে কাজ করার সময় দেয়া হয়না কোন হেলমেট। বেল্টের ব্যাবস্থাতো নেইই। ভবন তৈরির সময় যে নিসাপত্তা বেষ্টনী করা উচিত তা ঠিকমত তৈরি করা হয়না। এর কারনে প্রায়ই শ্রমিক ও পথচারী নিহত হচ্ছে। তারপরও পেটের দায়ে শ্রমিকরা এই অনিরাপদ স্থানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশে শিশুশ্রম বন্ধে আইনের কোন প্রয়োগ নেই। বাংলাদেশের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ন কাজে শিশুরা নিয়োজিত আছে। কিন্তু তাদের দেখবার জন্য বাংলাদেশের সরকার এগিয়ে আসে না। শিশুশ্রম বন্ধ শুধুমাত্র আইন দিয়ে সম্ভব নয়। শ্রমিক শিশুদের পুনর্বাসনের মাধ্যমেই শুধু এটি সম্ভব।
বাংলাদেশের বিভিন্ন শিল্প কারখানায় এখনও পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রনের কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। প্রায়ই এসব কারখানাগুলোতে আগুন লাগে আর প্রয়োজনীয় উপকরনের অভাবে ফায়ার সাভিসের আসার আগেই মানুষ জিনিসপত্রের পচুর ক্ষতি হয়।
সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর প্রায় বিশ লাখ শ্রমিক নিরাপত্তাজনিত কারনে নিহত হচ্ছে। বাংলাদেশেও এর সংখ্যা কম নয়। আজকের মে দবসে তাই শ্লোগান হোক "শ্রমিকদের নিরাপত্তা চাই।"
বাংলাদেশে শ্রমিকদের সমস্যাগুলো বের করা একলা কারো পক্ষে সম্ভব নয় আর সমাধান করাতো নয়ই। তবে সরকার যদি এ ব্যাপারে উদ্যোগ নেয় তবে আমার ধারনা সবাই সরকারকে সহায়তা করবে। কেননা বাংলাদেশের মানুষের নৈতিকতাবোধ অন্য যে কোন জায়গার চাইতে বেশি।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment