Monday, October 13, 2008

ভুলে গেছ তুমি যে "ফখরুদ্দিন"

ফখরুদ্দিনের বয়স তখন ৪৮। জীবনের এত লম্বা পথ পার করার পর হঠাৎই বোধোদয় হলো জীবনে আসলে সত্যিকারের জ্ঞান অর্জন করা হলো না। তাই সব ছেড়ে ছুড়ে জ্ঞানের সন্ধানে বের হলো সে।

খবর পাওয়া গেল অমুক জায়গায় এক ব্যাক্তি মানুষকে জ্ঞান দান করেন। তো সেদিকে ছুট লাগাল ফখরুদ্দিন। সেখানে পৌছে এলাকাবাসীর কাছ থেকে খোঁজ খবর নিয়ে সে একসময় পৌছে গেল সেই জ্ঞানীর প্রাসাদের সামনে। গিয়ে দেখল ওখানে অনেক লম্বা লাইন। মানুষজন লাইনে লাইনে গিয়ে তার কাছ থেকে জ্ঞান নিয়ে ফিরে আসছে। সেও দাড়িয়ে গেল লাইনে।

জ্ঞানদানকারীর কাছে জ্ঞান চাইতেই ফখরুদ্দিনকে সে একটা চামচ হাতে ধরিয়ে দিল। আর সে চামচে ছিল সামন্য একটু সরিষার তেল। জ্ঞানদানকারী ফখরুদ্দিনকে বলল "যাও, পুরো শহর ঘুরে এস, তবে সাবধান চামচের তেল যেন সামান্যও না পড়ে।"

যেই কথা সেই কাজ। ফখরুদ্দিন চামচের দিকে কড়া নজর রেখে সাবধানে পুরো শহর ঘুরে এল। একফোঁটা তেলও পড়েনি। ঘুরে এসে সে আবার জ্ঞানদানকারীর কাছে এল। জ্ঞানদানকারী তাকে জিজ্ঞেস করল "কি দেখলে?" ফখরুদ্দিন উত্তর দিল "আমিতো তেল বাচাতে গিয়ে শহরের কিছুই দেখতে পারিনি।" তখন জ্ঞানদানকারী তাকে ধমকে বলল "যাও এবার তুমি তেলও বাচাবে এবং তার সাথে পুরো শহর ঘুরে ভালভাবে দেখে আসবে।"

ফখরুদ্দিন আবার রওনা করল। তবে এবার সে শহর দেখতে গিয়ে অসাবধানতাবশত: তেলগুলো সব ফেলে দিল। তারপর হাজির হল সেই জ্ঞানদানকারীর কাছে। সব দেখে শুনে জ্ঞানদানকারী ঘোসনা দিলেন "ফখরুদ্দিন শুনে রাখ, তোমার পক্ষে একই সাথে কোন কিছুর যত্ন নেয়া এবং পাশাপাশি তার চারদিকে লক্ষ রাখা সম্ভব নয়"। তারপর ফখরুদ্দিন এখান থেকে এ জ্ঞান লাভ করে খুশি মনে ফিরে এল নিজের দেশে।

এ ঘটনার বেশ কয়েক বছর পর ফখরুদ্দিন এখন বাংলাদেশের তত্তাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা।

ফখরুদ্দিন মনে করিয়ে দিতে চাই "ভাই তুমি ফখরুদ্দিনই, তোমার দায়িত্ব ছিল বাংলাদেশের যত সম্পদ তাকে কিছুদিনের জন্য সুরক্ষিত রাখা। তুমি গত দেড় বছরে আশেপাশে বেশি নজর দিতে গিয়ে আমাদের সম্পদ অনেক নষ্ট করেছ। আর বেশি নজর দিওনা। তেল একদম ফুরাতে বসেছে।"

No comments: