বেশ কিছুদিন আগেই আমাদের এই গানের দেশ প্রাণের দেশে ঘটে গেল এক হৃদয় বিদারক ঘটনা। বাংলাদেশের রাজধানীর প্রানকেন্দ্র জিয়া আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের সামনে একটা চোখ জ্বালাময়ী (!) বাগানের জায়গায় সৌন্দর্য বৃদ্ধীকল্পে ইট কংকর নির্মিত মনমাতানো, গাঁজার মত নেশাময় গানের স্রষ্টা লালনের মূর্তি বানানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়। অথচ মূর্তি সৃষ্টির প্রায় শেষদিকে অর্ধনির্মিত লালনকে (লালনের মূর্তি) দিনের আলোয় সকলের সামনে হাতুড়ি, বাটাল দিয়ে কুপিয়ে, কতগুলো অমানুষের লাগাতার লাত্থিতে, অমানুষিকভাবে হত্যা (ধ্বংশ) করা হয়।
এ ঘটনায় সারা দেশের মানুষ কোন সাড়া না দিলে আমাদের সর্বদা জাগ্রত এবং জাগারনকারি সংস্কৃতিকর্মীরা চুপ থাকেননি। তারা তাদের বিচরনের স্থানগুলো বিভিন্ন ভাবে মাতিয়ে রেখেছেন এই আলোচনায়। অথচ তাদের প্রতিবাদের মুখে সরকার কোন জবাবই দেয়নি। এতে আমরা সকলেই মনক্ষুন্ন হয়েছি।
যাক এই সরকারকে দিয়ে যে কিচ্ছু সম্ভব না তা আমরা বেশ বুঝেছি। তারা দুর্ণীতী নিয়ে গুতোগুতি করে কানের ময়লার মত কিছুও যে বের করতে পারেনি তা দেখেই আমাদের যথেষ্ট শিক্ষা হয়েছে। এবার কোনমতে একটা নির্বাচন দিয়া ভাগলেই শান্তি।
তবে আগামীতে যে সরকার আসবে তাকে আমরা ছেড়ে কথা বলব কেন। তারা ২৮শে অক্টোবরের মানুষ নামক প্রানী হত্যার বিচার করতে পারুক আর না পারুক তাতে আমাদের কিছু আসে যায় না। কিন্তু লালনের মুর্তির হত্যার বিচার করতেই হবে। এটা তো আর মানুষের মত ফেলনা জিনিশ নয়। কি বলেন সবাই? তাই আগামী নির্বাচনের নির্বাচনী ইশতেহারে অবশ্যই এ ব্যপারে সুনির্দিষ্ট ঘোসনা থাকতে হবে।
আগামী নির্বাচনে দলগুলোকে অবশ্যই লালন মূর্তি ভাঙার পেছনে যুক্ত অপরাধীদের বিচার করার কথা সুস্পষ্ট আশ্বাস দিতে হবে। এবং তাদের কে ঘোসনা দিতে হবে যে, তারা ক্ষমতায় এলে অবশ্যই সেই একই জায়গায় অসংখ্য লালনের মূর্তি বানিয়ে রাস্তাকে অপরুপ সৌন্দর্যে মন্ডিত করবে। তাছাড়াও শহরের বিভিন্ন জায়গায় কুত্তা, বিলাই এবং বিভিন্ন মানুষের মুর্তি দিয়ে ভরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।
যদি তা না হয় তবে আমরা সংস্কৃতি কর্মীরা এ ব্যপারে প্রতিশ্রুতিহীন দলগুলোর বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলব। নানা ধরনের প্রপাগান্ডার মাধ্যমে ঐসব দলগুলোকে পঙ্গু করে দেব।
No comments:
Post a Comment