Tuesday, March 23, 2010

. টিপাইমুখ বাধ টারমিনেশন . ম ঈন উ দ্দী ন .

. প্রধানমন্ত্রী চিন্তিত:

প্রধানমন্ত্রী প্রচন্ড বিমর্ষ দিন কাটাচ্ছেন। সারাদিন একটা বিষয় নিয়েই চিন্তিত তিনি। তিনি কিছুতেই সিদ্ধান্ত নিতে দেরী করতে আর আগ্রহী নন। "যে করেই হোক এর একটা রফা করা দরকার। এভাবে বারবার আগ্রাসন চুপ করে মেনে নেয়া সম্ভব নয়। এবার এদের ঠেকাতেই হবে। পদ্মা, মেঘনা, যমুনা যদি না থাকে তবে বাংলাদেশেরই অস্তিত্ব থাকবে না। পদ্মাতো গেছেই, যমুনাও মরমর। একমাত্র ভরসা মেঘনার অস্তিত্ব নিয়ে টানা হেচড়া করতে ওদের আর সুযোগ দেয়া যাবে না। আমরন সংগ্রাম করে হলেও এ টিপাইমুখ সমস্যা সমাধান করব, আর এ সংগ্রামে যদি সফলতা না পাই, তবে আমার প্রধানমন্ত্রী থাকার আর কোনই প্রয়োজন নেই।" নিজের অফিসে মনে মনেই ভাবলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

কলিংবেল চাপ দিয়ে তাঁর পার্সোনাল এসিসট্যান্টকে ডাকলেন। সাথে সাথেই হাজির হলেন তিনি। "সব মন্ত্রীদের তলব করুন, বলবেন খুবই জরুরী বৈঠক।" আদেশ দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর পিএ ঠিকমতই তাঁর দায়িত্ব পালন করলেন। মন্ত্রীগন সরকারের বিভিন্ন জরুরী কাজ তাঁদের সচিবদের ভালভাবে বুঝিয়ে দিয়ে সাথে সাথেই রওনা দিলেন প্রধানমন্ত্রী ভবনের দিকে। আধঘন্টার মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের বৈঠকখানায় সকল মন্ত্রী হাজির। ঘটনার আকস্মিকতায় তাঁরা একটু দ্বিধাগ্রস্তই বলা চলে। "হঠাৎ আবার কি হলরে! জরুরী বৈঠক ডাকা হয়েছে।" একজন মন্ত্রীতো ফিসফিস করে বলেই ফেললেন।

পাঁচ মিনিটের মাথায় প্রধানমন্ত্রী তাঁর পানিসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টাকে সাথে নিয়ে হাজির হলেন। সবাই উঠে দাঁড়াতে গেলে প্রধানমন্ত্রী সকলকে বসে থাকতেই ইশারা করলেন। দেরী না করে দাঁড়িয়েই তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলতে শুরু করলেন, "আপনাদের অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, বাংলাদেশের অস্তিত্ব অচিরেই বিপদের মুখে পড়তে যাচ্ছে। আপনারা আপনাদের নিজ নিজ দায়িত্ব সুচারুরূপে পালন করতে গিয়ে হয়তো এ ব্যপারটা ঠিকভাবে গোচরে আনতে পারেননি। আপনারা জানেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশি রাষ্ট্র ভারত সুরমা-কুশিয়ারা নদীর জন্মদাত্রী নদী বরাকে অনেকদিন ধরেই একটা বাঁধ নির্মান করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতিমধ্যে তারা এটি নির্মানের আনুষ্ঠানিক ঘোসনা পর্যন্ত দিয়ে দিয়েছে। এ ঘোসনা আমাদের জন্য একটা বিপদের ডংকা হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে। তাদের নির্মিত ফারাক্কা আমাদের স্রোতস্বিনী পদ্মাকে মেরে ফেলেছে। তিস্তা ব্যরেজও আমাদের সমূহ ক্ষতি করেছে। অনেক নদী বিলুপ্ত হয়েছে। কয়েক কোটি মানুষের জীবিকা এ দুটি বাঁধের জন্য ধ্বংশপ্রাপ্ত হয়েছে। আমাদের অনেক প্রতিবাদ স্বত্ত্বেও তাদের এ কার্যক্রম আমরা ঠেকাতে পারিনি। অথচ আন্তর্জাতিক নীতি লংঘন করেই এ সব শোষন আমাদের দিকে চাপিয়ে দিলেও আন্তর্জাতিক মহল আমাদের কোন সাহায্যই করেনি, বা অন্যভাবে বললে আমরা তাদের সাহায্য আদায় করতে পারিনি।" বলতে বলতে উত্তেজিত হয়ে পড়লেন প্রধানমন্ত্রী, চেহারায় ক্ষোভের চিহ্ন স্পষ্ট।

একগ্লাস পানি খেয়ে আবার দাঁড়ালেন। "এবার তারা বরাক নদীতে বিদ্যুত উৎপাদনের নামে বিশাল এক বাঁধ নির্মান শুরু করতে যাচ্ছে। এ বাঁধ নির্মিত হলে আমাদের কমপক্ষে তিনকোটি মানুষ তাঁদের জীবিকা হারাবে, তাঁদের বাসস্থান বাসের অনুপযোগী হয়ে যাবে। বৃহত্তর সিলেট অচিরেই মরুভূমিতে পরিণত হবে। তাই, আমাদের দেশের স্বার্থে, যারা আমাদের ক্ষমতার আসনে বসিয়েছে তাদের স্বার্থে, ভারতকে আমরা কিছুতেই এ বাঁধ নির্মান করতে দেবনা। এ ব্যপারে আপনাদের কি মত?" বললেন মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে।

টেবিলের চারপাশে বসা মন্ত্রীদের মধ্যে তীব্র গুন্জন শুরু হল। নিজেরা নিজেরা কিছুক্ষন আলোচনা করলেন একে অপরের সাথে। ক্ষানিকক্ষন বাদে মন্ত্রীগন একে একে উঠে দাঁড়াতে লাগলেন। একজন দাঁড়িয়ে বললেন, "মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা গত কিছুদিনের পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে এ ব্যপারে অবগত হয়েছি। কিন্তু এসকল প্রচারনাতো সরকারের বিরোধী পক্ষ করছে বলে আমার মনে হয়।"

আরেক মন্ত্রীও মুখ খুললেন, "বিরোধী দল ও তাদের সহযোগীদেরকেই বেশি বেশি মাতোয়ারা থাকতে দেখা যাচ্ছে। আমার মনে হয় এগুলো সরকারের কাজে ব্যঘাত ঘটানোর জন্যই করা হচ্ছে। আর তাছাড়া ভারতের হাইকমিশনার সাহেবকে বলতে শুনেছি যে, এ বাঁধ নাকি ফারাক্কার মত না।"

আরেকজন মন্ত্রী দাঁড়িয়ে অনেকটা উত্তেজিত অবস্থায়ই বলে ফেললেন, "আমাদের উচিত শক্ত হাতে এসব আন্দোলন দমন করা। নাহলে বন্ধু দেশ ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যাবে।"

প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রীগনের কথা শুনে অনেকটা বিস্মিতই হলেন। "আপনারা ভুল ধারনা নিয়ে বসে আছেন। এ আন্দোলন কিছুতেই বিরোধী দলের আন্দোলন হতে পারেনা। টিপাইমুখ বাঁধ সমস্যা আমাদের সবার। তাই এ আন্দোলনে আমাদের পুরো জাতিকে একসাথে অংশ নিতে হবে। যেমন করে একাত্তরে আমাদের স্বাধীনতাকে কেড়ে এনেছি, সেভাবেই ভারতকে এ বাঁধ নির্মান ঠেকাব" বিস্ময়ের ধাক্কা কাটিয়ে বললেন প্রধানমন্ত্রী। "দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হলে টিপাইমুখ সমস্যা থেকে আমাদের রক্ষা পেতে হবে, এবং তাতে সফল হতে পারলে আমরা একে একে ফারাক্কা, তিস্তা ব্যারেজ ও অন্যান্য সমস্যাগুলোরও একটা রফা করার সুযোগ পাব। তাই আমরা যে করেই হোক ভারতকে এ বাঁধ নির্মান করতে দেবনা।" শেষের বাক্যটা অনেকটা চিৎকার করেই বললেন জননেত্রী।

সাথে সাথেই মন্ত্রীদের একজন দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলে উঠলেন, "অবশ্যই আমরা ভারতকে এ বাঁধ নির্মান করতে দেবনা।" সকল মন্ত্রী একযোগে "ঠিক" বলে সম্মতিসূচক আওয়াজ করলেন। আরেকজন মন্ত্রী দাঁড়ালেন, "তবে আমার মনে হয়, এ কাজটি আমাদের জন্য খুব সহজ সাধ্য হবেনা। তাই এ ব্যপারে আমাদেরকে সকল স্তরের জনগনের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত করতে হবে। আর অবশ্যই বিরোধী দলসহ, সকল রাজনৈতিক দলের সহায়তা চাইতে হবে। আর তার পাশাপাশি ব্যপক সচেতনতার ব্যবস্থা করতে হবে।"

"আপনি ঠিক বলেছেন। এজন্যে আমি প্রথমেই সকল সংসদ সদস্যদের নিয়ে বসতে চাই, যাতে আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে এ জাতীয় সমস্যা সমাধানের সূচনা করতে পারি। আর আজই আমি বিরোধী দলীয় নেত্রীর আলোচনা করব, যাতে এই জাতীয় সমস্যায় জাতি কিছুতেই ষড়যন্ত্রকারীদের ছলনায় ভুলে বিভক্ত হয়ে না যায়। আপাতত, আমাদের বৈঠক এখানেই শেষ করছি। তবে, আপনাদের সকলকে এ বিষয় নিয়ে বেশি বেশি ভাবার অনুরোধ জানাচ্ছি। আর আমাদের সকল শুভাকাঙ্খীর সাথে এ ব্যপারে আলোচনা করার অনুরোধ করছি। আরেকটা ব্যপার লক্ষ্য রাখবেন, আপনাদের কোন কথা বা কাজ আমাদের যেন ব্যর্থ করে না দেয়, পাশাপাশি প্রতিবেশি দেশ ভারতের সাথে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্কেও যেন ব্যঘাত না ঘটে। আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে শেষ করছি, বাংলাদেশ দীর্ঘজীবি হোক।"

২. বিরোধী দলের নেত্রীর সাথে বৈঠক:

মন্ত্রীরা সব চলে গেছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় হতে। প্রধানমন্ত্রী এখন অনেকটাই স্বস্তি বোধ করছেন এই জন্য যে, তিনি কিছুদিন দেরী হলেও টিপাইমুখ নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্তের দিকে এগোতে যাচ্ছেন। এতদিন ব্যপারটা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকলেও তাঁর ব্যক্তিগত ও রাষ্ট্রীয় জটিলতার কারনে অনেকটা পিছিয়ে যেতে হয়েছে। সরকার গঠন করায় তাঁদের এখন অনেক দায়-দায়িত্ব। সবকিছু চাইলেও আর সহজে পাওয়া যায়না। নানা ধরনের ফরমালিটিজ সবকিছুই দেরী করিয়ে দেয়। তারওপর কুটনৈতিক ঝামেলাতো রয়েছে। জাতীয় ব্যপারে বিদেশী রাষ্ট্র আর সংস্থাগুলো যেভাবে নাক গলিয়ে দেয় তাতে কাজের সময় নানা দিক ভেবে চিন্তে করতে হয়। বিরোধী দলের তো এই চিন্তা নেই, দাবী করলেই করতে পারে, চাইলেই রাস্তায় নামতে পারে। তবে, তারা যদি তা না করত তবে আরো সমস্যা হত। অনেক কিছুই চোখ এড়িয়ে যেত। বিরোধী দল সরকারী দলের আয়নার মত, সহজেই ভুল ত্রুটিগুলো ওদের কাছ থেকে সরকার জানতে পারে। তাদের বিভিন্ন গঠনমুলক সমালোচনা সরকারের কাজকে নির্ভুল করতে সাহায্য করে।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর পিএস কে ডাকলেন। বললেন, "বিরোধী দলের নেত্রীর সাথে আজই দেখা করার ব্যবস্থা করুন?"

"জ্বী আচ্ছা, আমি ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি।" পিএস এই বলে তাঁর ডেস্কে গেলেন।

পি এস বিরোধী দলের নেত্রীর পি এসের কাছে ফোন দিলেন। তিনি জানালেন নেত্রী কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে টিপাইমুখ বাঁধ সমস্যায় বিরোধীদলের কর্তব্য নিয়ে তাঁর দলের উচ্চপদস্থ নেতাদের সাথে আলোচনা করছেন। পি এস তাঁকে ধন্যবাদ দিয়ে ফোন রেখে দিলেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে একথা জানালেন। প্রধানমন্ত্রী পিএসকে বললেন, "এই মুহুর্তেই বিরোধী দলের কার্যালয়ে যাবার ব্যবস্থা করুন। তবে কোন মিডিয়া যেন এই মুহুর্তে কিছুই না জানতে পারে।"

প্রধানমন্ত্রী তাঁর জন্য নির্ধারিত গাড়ির পরিবর্তে একটি সাধারন গাড়িতে চড়ে বিরোধী দলের কার্যালয়ে রওনা দিলেন। পেছনে শুধু একটা পুলিশ ভ্যান তাঁর নিরাপত্তার জন্য পেছন পেছন চলল। ঢাকা শহরের যানজট পেরিয়ে প্রায় দেড়ঘন্টার মধ্যে পৌছে গেলেন সেখানে। অনেকদিন পর তাঁকে ঢাকা শহরের যানজট দেখতে হল। দেখে অনেকটা বিচলিতই হলেন বলা চলে। যানজট নিরসনের ব্যপারটাও তিনি গুরুত্ব দেবেন বলে মনে মনে ভেবে রাখলেন। সাধারনভাবে তিনি তাঁর পিএসকে নিয়ে বিরোধী দলের কার্যালয়ে প্রবেশ করলেন। সেখানকার সিকিউরিটি গার্ড তাঁকে দেখে প্রথমে চিনতে না পেরে ভেতরে যেতে দিচ্ছিলোনা। পরে চিনতে পেরে অবাক হয়ে রাস্তা ছেড়ে দিল। কার্যালয়ে প্রবেশ করতেই সবাইই অবাক হয়ে দাঁড়িয়ে গেল, যেন তারা কোন ভুত দেখছে। তিনি নেত্রীর সাথে দেখা করতে চান জেনে একজন তাঁকে রাস্তা দেখিয়ে কনফারেন্স রুমে নিয়ে এলেন।

এদিকে আড়াই ঘন্টা ধরে বৈঠক চলছে বিরোধী দলের কনফারেন্স রুমে। বিরোধী দলের সবচে ঝানু ও জ্ঞানী ব্যক্তিরা নেত্রীর সাথে বৈঠকে বসেছেন। সাথে আছে নদী ও পানি সম্পদ বিষয়ে পারদর্শী কয়েকজন বিজ্ঞানী। দেশের মহাসংকটের দৈববানীতে তাঁরা অনেকটা বিচলিত। সরকারের নিশ্চুপ অবস্থানও তাঁদেরকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভাবিয়ে বিকারগ্রস্ত করে দিচ্ছে। তাঁরা বিভিন্ন মাল্টিমিডিয়া প্রদর্শনীর মাধ্যমে টিপাইমুখ বাঁধের প্রভাব বিশ্লেষন করছিলেন এবং এ বাঁধ নির্মান ঠেকানোর কৌশল নির্ধারনের চেষ্টা করছিলেন। এমন সময় হঠাতই কনফারেন্স রুমের দরজা খুলে প্রধানমন্ত্রী প্রবেশ করলেন। সবাই ঘটনার আকস্মিকতায় কিছুই প্রথমে ঠাওর করতে পারছিলেন না। পরে একসাথে সবাই দাঁড়ালেন। বিরোধী দলীয় নেত্রী অনেকটা আনন্দের সাথে উঠে গিয়ে তাঁকে ধরে তাঁর আসনে বসিয়ে দিলেন এবং নিজে পাশের চেয়ারে বসলেন।

প্রধানমন্ত্রী সকলকে বিস্ময়ের মধ্যে না রেখে কোন ভনিতা না করেই তাঁর আগমনের হেতু বর্ণনা করলেন এবং এ ব্যপারে তাঁর ভূমিকা নিতে দেরী হওয়ার কারনগুলো একে একে বর্ণনা করলেন এবং এ জন্য তিনি সকলের কাছে ক্ষমা চাইলেন। সকলে তা সাদরে গ্রহন করলেন। সবাই তাঁকে তাঁর আগমনের জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করলেন। প্রধানমন্ত্রীকে সাথে নিয়ে তাঁরা আগের আলোচনার পুনরাবৃত্তি করলেন এবং আরো ভালভাবে টিপাইমুখ বাঁধের প্রভাব সম্বন্ধে ওয়াকিফহাল করলেন। আরো একঘন্টা পর তাঁরা সবাই এ সিদ্ধান্তে এলেন যে, টিপাইমুখ সমস্যা নিয়ে তাঁরা সবাই একসাথে কাজ করবেন। তবে কোন আনুষ্ঠানিক ঘোসনার আগে মিডিয়াতে তাঁদের এ বৈঠকের কথা প্রকাশ করা যাবে না।

তিন.
সেদিনের পর এক সপ্তাহ পার হয়ে গেছে। দেশের আরো দশটা সমস্যার পাশাপাশি টিপাইমুখ নিয়ে সাধারন জনগনের মধ্যে দুএকটা করে তর্ক বিতর্ক চলছে। অনেকে সরকারের চুপচাপ ভূমিকার সমালোচনাও করছে। কিন্তু সরকারের উপরিমহলে কি ঘটছে তাদের এখনো জানানো হয়নি। গত একসপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী আর বিরোধী দলের নেত্রী ভাল করে ঘুমানোর সুযোগ পাননি। গত এক সপ্তাহে বারবার তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। বর্তমান ও সাবেক মন্ত্রীপরিষদের এ ব্যপারে অভিজ্ঞদের নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বৈঠক হয়েছে এর সমাধান খোঁজার জন্য। টিপাইমুখ সমস্যাটা নিয়ে সত্যিই এক জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। একে তো ভারতের সরকার টিপাইমুখ নিয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছে এবং পাশাপাশি কুটনৈতিক প্রচেষ্টায়ও যথেষ্ট এগিয়ে গেছে। এ অবস্থায় এর বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে এগিয়ে যাওয়া খুব সহজসাধ্য হবে বলে মনে হয়না। তারপরও দেশের বর্তমান ও সাবেক নের্তৃত্ব দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়ে একত্র হয়েছে। সফলতো তাদের হতেই হবে যেকরেই হোক।

প্রধানমন্ত্রীর চিন্তিত চেহারা আজ আর অতটা প্রকট নয়। এর কারন তিনি টিপাইমুখ সমস্যার সমাধানের জন্য অনেকটা এগিয়ে গেছেন। সবচেয়ে বড় অগ্রগতি দেশের নের্তৃত্বে একটা ঐক্য তৈরী হয়েছে। এ ঐক্যই হলো দেশের সবচে বড় শক্তি। নের্তৃত্বে ঐক্যই জনগনের ঐক্যের ভিত্তি। আর সবাই একসাথে থাকলে কোন সমস্যাই আর সমস্যা নয়। আগামী কালই দুদলের অভিজ্ঞ নেতাদের নিয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠক হবে। এ বৈঠকেই পরবর্তি পদক্ষেপ সম্বন্ধে স্পষ্ট রূপরেখা প্রকাশ করা হবে। আর তার সাথে সাথেই জনগনকে পুরো ব্যপারটায় সংশ্লিষ্ট করা হবে এবং জাতীয় ঐক্যের ব্যবস্থা করা হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী পুরো আয়োজন নিজে তদারক করছেন। বারবার পিএসকে বিভিন্ন ব্যপারে তাগাদা দিচ্ছেন। মেহমানদের নিমন্ত্রনের ব্যপারে খোঁজ নিচ্ছিলেন। সাথে সাথে সাংবাদিকদের দাওয়াত দেয়ার ব্যপারে তাগাদা দিচ্ছিলেন। দুপুর নাগাদ সবকিছুই মোটামুটি প্রস্তুত। এসবের সাথে সাথে অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভূমিকায় অন্যান্য সরকারী কাজগুলোও প্রখর ভাবে তদারক করেছেন। কেননা তা না হলে প্রশাসনের খাদেমরা দুর্নীতির সুযোগ পাবে এবং প্রশাসন দুর্বল হয়ে পড়বে। তাহলে দেশও দুর্বল হবে পাশাপাশি টিপাইমুখসহ অন্যান্য সকল ইস্যুতেই সরকারকে ব্যর্থ হতে হবে

সারাদিন স্বাভাবিক কার্যক্রমের পাশাপাশি দলের মন্ত্রী ও প্রেসিডিয়াম সদস্যদের খোঁজ খবর নিয়েই কাটল প্রধানমন্ত্রীর। অপরদিকে বিরোধী দলীয় নের্তৃ সারাদিন তাঁর দলের অভিজ্ঞ নের্তৃস্থানীয় সদস্যদের খোঁজখবর নিয়েছেন। নদী ও পানি বিশেষজ্ঞদেরকে আগামীকালের বৈঠকের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য ও তাঁদের যথাযথ ভূমিকা পালনের জন্য অনুরোধ করে ফোন করেছেন। সবাইকে বৈঠকের গুরুত্ব সম্বন্ধে অবহিত করেছেন। তাঁর উপদেষ্টাদেরকে নিয়ে আলোচনা করেছেন অনেকবার। বিকেল নাগাদ প্রায় সবকিছুই প্রস্তুত। আগামীকালের বৈঠকের জন্য বিরোধী দলের পক্ষ হতে প্রায় সম্পুর্ন প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।


৪.
খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। হাতমুখ ধুয়েই তাঁর ব্যাক্তিগত সচিবকে ফোন করলেন। খোঁজখবর নিলেন আয়োজনের ব্যপারে। আয়োজন প্রায় সবই সম্পন্ন হয়েছে। আজ সকাল দশটায় আলোচনা শুরু হবে। আজই একটা ভাল সিদ্ধান্তের আশা করছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিরোধী দলের নেত্রীর কাছেও ফোন করলেন। তাঁদের প্রস্তুতি সম্বন্ধে খোঁজ নিলেন।

এদিকে ভারতীয় হাইকমিশনার রাতে ঘুমাতে পারেননি। সবকিছু কেমন যেন উলট পালট লাগছে তাঁর। এবার বুঝি তার চাকরীটা হারাতে হয়, এ চিন্তাটা কেন যেন বারবার চলে আসছে। বেশ কয়েকটা বুদ্ধিজীবিকে ভাড়া করে বিভিন্ন সভায় তাদেরকে দিয়ে টিপাইমুখ বাঁধ সম্বন্ধে পজিটিভ কথা বলিয়েছেন। বেশ কিছু মন্ত্রীকেও প্রথম প্রথম রাজনৈতিক সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে পক্ষে বলানো গেছে। ঐ মন্ত্রীদের দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে নিরস্ত রাখা গেছে এতদিন। কিন্তু বিরোধীদলের ভূতে পেয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। হঠাৎ কথা নাই বার্তা নেই টিপাইমুখ নিয়ে আজ বৈঠক বসছে। “একবার আমার সাথে আলোচনাও করলনা।“ অস্ফুট স্বরে বেরিয়ে এল হাইকমিশনারের মুখ দিয়ে।

ভারত থেকে বেশ কয়েকবার ফোন এসেছে হাইকমিশনারের কাছে। হঠাৎ বাঙ্গালী জাতি কেন একত্র হয়ে যাচ্ছে সে ব্যাপারে প্রশ্ন করা হয়েছে তাঁকে। কোন জবাব দিতে পারেননি। অজানা আশংকায় বুক কেঁপে কেঁপে উঠছে। বাঙ্গালী জাতি একত্র হলে আর অন্য কোন জাতিই তার সামনে দাঁড়াতে পারেনা। এরা অত্যন্ত সাহসী জাতি। এরা দাবী আদায়ের জন্য জীবন দিতে সদাই প্রস্তুত থাকে। “যারা জীবন দেয়ার জন্যই রাস্তায় নামে, তাদের কি করে ভয় কিংবা লোভ দেখিয়ে পিছিয়ে দেয়া যায়?” কিছুতেই এ সূত্র মিলছেনা। সামনে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে একটা নতুন মাত্রা যোগ হবে তাতে কোন সন্দেহ নাই। একবার যদি বাংলাদেশ ভারতকে পরাজিত করে তবে ভবিষ্যতেও বারবার তার বিরুদ্ধে এ যুদ্ধ চালিয়ে যাবে। “কিছুতেই এ যুদ্ধে হারা যাবেনা। যে করেই হোক এদের থামাতে হবে।“ বিড়বিড় করে বললেন হাইকমিশনার।

ভারতীয় হাইকমিশনে হঠাৎই নতুন এক চান্চল্য সৃষ্টি হল। হাইকমিশনার সাহেব জরুরী বৈঠক ডেকেছেন। বৈঠকে সভ্যগনদের তালিকায় রয়েছে হাইকমিশনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বাংলাদেশে অবস্থানরত প্রভাবশালী ভারতীয়, বাংলাদেশে বিভিন্ন এসাইনমেন্টে থাকা র’ এর সদস্যগন এবং এ যূগের মীর জাফর তথা বাংলাদেশি কিছু তাঁবেদার।



৫.

প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের বৈঠক শুরু হল। বৈঠকের সভ্যগন সবাইই ঠিক সময়ের আগেই উপস্থিত হয়েছেন। তাঁদের সময়ানুবর্তী দেখে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভবিষ্যত সংগ্রামের অনুপ্রেরণা পেলেন। সভায় যারা উপস্থিত হলেন তাঁরা ছিলেন সরকার ও বিরোধী দলের জ্ঞানী সংসদ সদস্যগন এবং দেশের গন্যমান্য জ্ঞানী ব্যক্তিগন। সভায় একই সাথে বৈজ্ঞানিক ও রাজনীতিবিদ তথা রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের একত্র করা হয়েছে। প্রথমত সমস্যার ধরন ও প্রকটতা বিচার বিশ্লেষন করে তার সমাধানে বৈজ্ঞানিক পন্থাকে উচ্চমানের রাজনৈতিক ও পররাষ্ট্রনীতি ব্যবহার করে সর্বোচ্চ সফলতা অর্জনের চেষ্টা। সভায় সামরিক তিন বাহিনীর প্রধানসহ গুরুত্বপূর্ন পারসোনেলগনও উপস্থিত হলেন।

অনুষ্ঠানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করলেন প্রধানমন্ত্রী এবং তিনি তাঁর সহকারি হিসেবে বিরোধী দলীয় নেত্রীকে মনোনয়ন করলেন। এরকম ঘটনা সারাবিশ্বেই অত্যন্ত দুর্লভ। করতালির মাধ্যমে সবাই প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেত্রী কে অভিনন্দন জানালেন। বিরল এ ঘটনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুরু হল। সবার মাঝেই একটা বাড়তি উদ্যমের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেল পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে। অনুষ্ঠানের শুরুটা পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত দিয়ে শুরু হল। তেলাওয়াত করলেন বিরোধী জোটের ইসলামী দলের সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল। তিনি পবিত্র কোরআনএ পানিবন্টন সংক্রান্ত কয়েকটি আয়াত পাঠ করে শোনালেন এবং এর অর্থকে রাসুলুল্লাহর পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন হাদীসের মাধ্যমে বিশ্লেষন করলেন সবার মাঝে। সভাসদদের মাঝে যারা পবিত্র কোরআনকে একটু খাট করে দেখতেন তাঁরা সহ সবাইই অবাক হলেন। তাঁরা অবাক হলেন এই ভেবে যে, দেড় হাজার বছর আগে আরবে তাঁদের আজকের সমস্যা ও তার সমাধান দেয়া হয়েছে। আর এভাবেই প্রায় সব সমস্যার সমাধানও যে কুরআন দেবার ক্ষমতা রাখে তার ব্যপারে তাঁদের অনেকেরই সন্দেহ থাকলনা।

এরপর অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী বক্তব্য রাখলেন বিরোধী দলীয় সভানেত্রী। তিনি সবাইকে তাঁর ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর টিপাইমুখ সংক্রান্ত উদ্বেগের কথা জানালেন। তিনি ভালভাবেই সবাইকে বুঝিয়ে দিলেন যে, টিপাইমুখ সমস্যার গভীরতা কতটুকু তাঁরা তা পুরোপুরি আন্দাজও করতে পারছেননা। এক অজানা আশংকা রয়ে গেছে পুরো ব্যাপারটায়। প্রধানমন্ত্রী ও তিনি চান এ সমস্যার গভীরতা মাপা হোক। টিপাইমুখ নিয়ে একটা সঠিক সমাধানে যেন সরকার আসতে পারে সে জন্যে উপস্থিত সকলের সহায়তা প্রয়োজন। সবার সাহায্য প্রার্থনা করে তিনি বক্তব্য শেষ করলেন।

তারপর বিভিন্ন পরিবেশ বিজ্ঞানীগন বক্তব্যে টিপাইমুখ বাঁধের অবস্থান ও তার গুরুত্ব বিশ্লেষন করলেন। এ বাঁধ নির্মানে ভারতের আর্থিক ও কুটনৈতিক লাভ বিশ্লেষন করে শোনানো হল। মাল্টিমিডিয়া প্রেসেন্টেশনের মাধ্যমে এ বাঁধ আমাদের নদীর উপর কেমন প্রভাব ফেলবে তার বর্ননা করা হলো। নদীগুলোর সাথে জীবিকার সম্পর্ক রয়েছে এমন লোকদের বর্ননা করা হলো এবং বাঁধ নির্মান উত্তর নদীর পরিবর্তনে এঁদের কতটুকু ক্ষতি হতে পারে তা বিশ্লেষিত হলো।

একজন সংসদ সদস্য ভারতের সাথে বাংলাদেশের কুটনৈতিক সম্পর্ক বিশ্লেষন করলেন এবং বাঁধ নির্মানের মত স্বেচ্ছেচারীতার বিরুদ্ধে জোর প্রতিবাদ করলেন। একে একে সংসদ সদস্য এবং পররাষ্ট্র ও রাজনৈতিক বিশারদগন এ সমস্যা সমাধানের বিভিন্ন পন্থা ও সুযোগগুলো বিশ্লেষন করলেন। আন্তর্জাতিক মহলের ভূমিকাও আলোচিত হল। সামরিক বাহিনীগুলোর সম্ভাব্য করনীয়গুলো উল্লেখ করলেন সেনাবাহিনী প্রধান।

সমাপনি বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ করলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি সবাইকে গুরুত্ব সহকারে সভায় সক্রিয় অংশ নেয়ার জন্য ধন্যবাদ দিলেন। সবাইকে সমস্যা সমাধানকল্পে তাঁদের নিজেদের আয়ত্বে থাকা কাজগুলি গুছিয়ে নিতে অনুরোধ করা হলো। তাঁদের লেখনী ও বক্তব্যের মাধ্যমে জনগনকে সচেতন করার ব্যপারে জোর দিলেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের বিরুদ্ধে শত্রুদের মিত্র এদেশীয় সকলকে শাস্তির হুমকি দিলেন এবং সমস্যা সমাধানে দৃঢ় সংকল্প ব্যক্ত করে অনুষ্ঠান শেষ করলেন।

রাতে সরকার দলের কয়েকজন মন্ত্রী ও বিরোধী দলের কয়েকজন সংসদ সদস্যের একটি দল সংবাদ সম্মেলন করলেন। সংবাদ সম্মেলনে সারা দেশের মানুষকে আশ্বস্ত করলেন যে, তাঁরা সবাই দেশের টিপাইমুখ এর বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। যে করেই হোক একে রুখে দেয়া হবে।


সারাদিন নানা দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটানোর পর ভারতীয় হাইকমিশনার রাতে টিভিতে সংবাদ সম্মেলনের দৃশ্য দেখে স্ট্রোক করলেন। তাঁকে রাতেই এপোলো হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হল। ফলে ভারতের কেন্দ্রীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁর সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হলোনা। তাঁকে দেশে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য ব্যবস্থা নেয়া হলো। আর ভারতের পররাষ্ট্র বিভাগের হোমড়া চোমড়া একজনকে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হলো।


৬.
পরদিন সংসদে জরুরি বৈঠকের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন আবেদন জানালেন। সারাদিনের বাকিটা সময় অন্যান্য নিয়মিত কাজে ব্যস্ত থাকলেন তিনি। গত তিনদিন তেমন বেশি সময় না দেওয়ায় অনেক কাজ জমে গেছে। তার ওপর তিনি সব কাজেই স্বচ্ছতা পছন্দ করেন। তিনি সবসময়ই একথা মাথায় রাখেন যে, তিনি এদেশের জনগনের জন্য নিয়োজিত কর্মচারীদের প্রধান মাত্র। তাঁকে ঠিকই পাঁচ বছর পর সব কাজের জবাব দিতে হবে। আর তিনি তাঁর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে সব কাজে তাঁর সর্বশক্তি নিয়ে আন্জাম দিয়ে যাচ্ছেন। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পাশাপাশি তাঁর এত বড় দায়িত্ব পালনে সৃষ্টিকর্তার সাহায্য প্রার্থনা করে প্রতি রাতেই বেশ খানিক সময় তিনি জায়নামাজে সেজদায় পড়ে থাকেন। এর সুফলও তিনি পাচ্ছেন। তাঁর সবচে বড় সাফল্য তিনি জাতিকে আজ একতাবদ্ধ করার একটি সুযোগ পেয়েছেন। তিনি হয়তো একদিন চলে যাবেন কিন্তু তাঁর প্রিয় দেশের সার্বভোমত্ব একতাবদ্ধ জনগনের শক্তিতে অটল থাকবে।

বিকেলে কাজের ফাঁকে জানতে পারলেন যে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি তাঁর আবেদন কবুল করেছেন। তিনি আগামী দিন সংসদে জরুরি বৈঠকের ঘোসনা দিয়েছেন। সকল সংসদ সদস্যের কাছেই এ খবর পৌছে দেয়া হয়েছে। তারপরও প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখতে সক্ষম সংসদ সদস্যদের দুরালাপনের মাধ্যমে খোঁজ নিলেন এবং ঠিক সময়ে উপস্থিত থাকার জন্য তাগাদা দিলেন।

এরই মধ্যে তাঁর পার্সোনাল সেক্রেটারী এসে তাঁকে জানালেন যে, ভারতীয় হাইকমিশনার অসুস্থ অবস্থায় এপোলো হাসপাতালে আছেন। তিনি সন্ধ্যার পর তাঁকে দেখতে যাবার জন্য ব্যবস্থা করার আদেশ দিলেন। এমন কঠিন সময়ে ভারতের সাথে কিছুতেই কুটনৈতিক সম্পর্ক দুর্বল করা যাবেনা। এতে সব কিছুই ভেস্তে যাবে।

No comments: