৭২ এর সংবিধান কার্যকর হতে যাচ্ছে। ব্যপারটা কি বেশ চিন্তার বিষয় মনে হচ্ছে না? আমি তো রীতিমত ঠান্ডা যুদ্ধের গন্ধ শুঁকতে পারছি। পুরনো-পঁচা বাতিল ঐ সংবিধান দেশের নীতিতে একই সাথে গনতন্ত্র আর সমাজতন্ত্রকে একসাথে স্বীকৃতি দিয়েছিল। এ দুই পরস্পর বিরোধী নীতিকে একসাথে রেখে, তার ওপর আল্লাহর উপর থেকে আস্থা ছেড়ে দিয়ে দেশকে কোথায় যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তা নিয়ে অবশ্যই চিন্তার অবকাশ রয়েছে।
সমাজতন্ত্র, শুনলেই মনে পড়ে সোভিয়েত ইউনিয়নের কথা যা ভেঙে-চুরে আজ সুপ্ত পরাশক্তি রাশিয়াতে পরিণত হয়েছে। সমাজতন্ত্রে সকল সম্পদের ব্যক্তিগত মালিকানাকে নিষিদ্ধ। রাষ্ট্র সেখানে সকল সম্পদের মালিক এবং সম্পদের বণ্টন সমানভাবে সবার মাঝে বণ্টন করার নিয়ম এখানে।
অপরদিকে গনতন্ত্র চর্চায় সবার সামনের অবস্থানে রয়েছে আমেরিকা নামক পরাশক্তি। গনতন্ত্র স্বীকৃতি দেয় পুঁজিবাদকে। আর পুঁজিবাদ হল এমন নীতি যেখানে রাষ্ট্র কোন সম্পদের মালিক নয়, জনগন প্রত্যেকে আলাদা আলাদা ভাবে তাদের নিজেদের দখলে থাকা সম্পদের মালিক।
সমাজতন্ত্র এবং পূঁজিবাদী গনতন্ত্র হল দুটি পরস্পর বিরোধী নীতি। এ দুই নীতি কেমন করে একই সংবিধান দ্বারা স্বীকৃত হতে পারে তা কৌতুহল উদ্দীপক। দেখা যাক, কেমন করে এ দুটি নীতি একসাথে বসবাস করে, কিছুদিন গেলেই নিশ্চয়ই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। আমেরিকা আর সোভিয়েত ইউনিয়নের সেই ঠান্ডা যুদ্ধ না আবার লেগে যায় এই ভয় হচ্ছে। একই ঘাটে বাঘ আর ছাগে পানি খেতে গেলে, ছাগের কপালে বাঘের পানিগ্রহনপূর্ব হালকা নাস্তায় পরিণত হবার সম্ভাবনা অনেক বেশি। যেমন করে সোভিয়েত ইউনিয়ন আজ রাশিয়াতে পরিণত হয়েছে, তেমনি পূঁজিবাদ কিংবা সমাজতন্ত্রের যে কোন একটা অপরটার হাতে নিহত হবে এটা পুরোপুরি নিশ্চিত ভাবে বলা যায়। তবে কোনটা টিকে থাকবে তা বলা কঠিন। ৭২ এর পর রক্ষীবাহিনীর হাতে যেমন করে নিহত হয়েছে অজস্র সমাজতান্ত্রকামী তেমনি আরেকটা হলোকাস্টের পূর্বাভাস অনেকের হৃদয়কেই হয়তো শংকিত করে তুলছে।
No comments:
Post a Comment