আওয়ামী
লীগ সব সময় শুধু ২৫০ সিটের বড়াই করে। ওরা ওদের সব কাজে জনগনের সমর্থন আছে
বোঝানোর জন্যে চার বছর আগে পাওয়া সিটগুলোর সংখ্যা মনে করিয়ে দেয়। অথচ সাহস
থাকলে একটা গনভোট দিয়ে তাদের জনমত যাচাই করে নিতে কি সমস্যা, দেখুক কতজন
মানুষ তাদের সব কাজকেই সমর্থন করেছে।
আকাম-কুকাম বিএনপি-আওয়ামী
লীগ উভয়েই কম-বেশি করে। কিন্তু আওয়ামী লীগ আকামে এত্ত বেশি পারদর্শী আর
মাত্রাতিরিক্ত যে কোন লাগাম দিয়েই আটকানো সম্ভব না। অথচ ইতিহাস বলে, এটা
ভাল লক্ষ্যন নয়। ১৯৯৬-২০০১ এ যারা আমার গ্রামের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব
কায়েম করে রেখেছিল, তারা পরবর্তি সরকারের আমলে হয় গনপিটুনিতে মরেছে, নইলে
দেশ/এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছে। এমনকি যারা এলাকা থেকে দুরে আছে, তারা বর্তমান
সরকারের আমলেও এলাকায় যেতে পারেনি। যারা দেশে ফিরেছে তারা হয় ভাল হয়ে
গিয়েছে, রাজনীতি থেকে সরে দাড়িয়েছে, নইলে শহর কেন্দ্রীক রাজনীতি পরিচালনা
করছে। ফেনীর যে এলাকায় আমার বাড়ি, সেখানটাকে সবাই আগে বঙ্গবন্ধুর ঘাটি বলত,
কিন্তু ঐ জায়গায় আওয়ামী লীগ এখন সবচে ঘৃনিত রাজনৈতিক দল। এ সরকারের আমলেও
নতুন করে সেখানে কিছু আগাছা জন্মেছে, কিন্তু তারা অত্যন্ত চুনোপুটি, ফুঁতেই উড়ে যাবে।
আওয়ামী লীগ দুর্নীতি, সন্ত্রাস আর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের যে নজির রেখেছে,
তাতে তাদের পক্ষে ক্ষমতা হারানোটা একটা দু:স্বপ্ন। নিজেদেরকে
রাজনৈতিক-সামাজিক ভাবে রক্ষা করতে ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখা অত্যন্ত জরুরি।
এরজন্যে তাদের ব্যবস্থারও কমতি নেই। তত্বাবধায়ক সরকার রহিত হয়েছে, বিরোধী
দুটো দলের কেন্দ্রীয় সব নেতাই জেলে। পাড়া-মহল্লা-গ্রামের নেতাকর্মীদেরকে
লিস্ট করে জেলে পুরে দেয়া হচ্ছে, অথবা মেরে ফেলা হচ্ছে। এত ব্যবস্থার পরও
তারা মানসিকভাবে শান্তিতে নাই, ইতিমধ্যেই অনেকে বিদেশে যাবার রাস্তা ঠিক
করে ফেলেছেন, কেউ কেউ পরিবারকে পাঠিয়ে দিয়েছে।
দুর্নীতি-কিংবা-সন্ত্রাস এই দুই দিয়ে দেশ চালিয়ে পরে দৌড়ের উপর থাকার কি
প্রয়োজন? তারচে একটা দল যদি কোনমতে কষ্ট-মষ্ট করে সুচারুরুপে দেশ চালিয়ে
দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসতে পারে, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই দেশের রাজনৈতিক চর্চার
একটা চমতকার পরিবর্তন আসবে। চলমান গনহত্যা আর সরকারী সন্ত্রাসের পূর্বক্ষন
পর্যন্ত আমার মনে হয়েছিল, আওয়ামী লীগই প্রথম দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসুক,
কিন্তু পরিস্থিতি এখন অনেক দুরে। আওয়ামী লীগকে মানুষ এখন ভয় পায়, যাকে ভয়
পায় তাকে ক্ষমতা রেখে সাধারন মানুষ নিরাপত্তাবোধ করবে না। সাধারন মানুষের
তাদের প্রতি বিরূপ মনোভাবই বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির ফলাফলে প্রভাব
ফেলবে।